নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচর পরিদর্শন শেষে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দল। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার ফিরে উখিয়ায় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ট্রানজিট ক্যাম্পে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাদের নিজ নিজ ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে, গত শনিবার কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের দুজন নারী সদস্যসহ ৪০ জনের প্রতিনিধি দলটি ভাসানচর আশ্রয়ন প্রকল্প পরিদর্শনে গিয়েছিল।
ভাসানচর পরিদর্শন শেষে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানান, তারা গত শনিবার পৌঁছানোর পর থেকে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য নির্মিত ঘর, মসজিদ, সাইক্লোন সেল্টারসহ বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে দেখেছেন। সেখানকার সবকিছুই তাদের কাছে ভালো লেগেছে। রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য ভাসানচরে সরকার যে ব্যবস্থা করেছে তা দেখে মনে হয়েছে রোহিঙ্গারা এখানে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারবে।
তারা জানান, সেখানে না যাওয়ার আগে ভাসানচর সম্পর্কে অন্যান্য রোহিঙ্গাদের মতো তাদেরও ভুল ধারণা ছিল। কিন্তু সবকিছু নিজের চোখে দেখে এখন ভুল ভেঙে গেছে। তারা নিজেদের চোখে দেখে আসা ভাসানচরের বর্ণনা ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের শোনাবেন। ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যেতে আগ্রহ দেখাতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. শামসুদ্দোজা বলেন, ‘প্রতিনিধি দলে নারী সদস্যসহ বিভিন্ন ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা ছিল। ভাসানচর সম্পর্কে রোহিঙ্গাদের নেতিবাচক ধারণা দূর করতে নিজের চোখে দেখার জন্য তাদের সেখানে নেওয়া হয়েছিল। পরিদর্শন শেষে তারা ফিরেছে। তারা নিজ নিজ ক্যাম্পে ফিরে অন্য রোহিঙ্গাদের বোঝালে তারাও ভাসানচরে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করতে পারে।’
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার ঠাঁই হয়েছে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের পাহাড়ে। সেখানে ৩৪টি ক্যাম্পে ঠাঁসাঠাঁসি করে বসবাস করা রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে অস্থায়ীভাবে স্থানান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাস থেকে সেখানকার ৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকা রক্ষা করতে ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ এবং এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা সাড়ে তিন শতাধিক রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে ইতিমধ্যে ভাসানচরে আশ্রয় দিয়েছে সরকার।
Leave a Reply